চোখ ভারী লাগার কারণ -সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

অনেক সময় আমরা চোখের ব্যথার সম্মুখীন হয়ে থাকি কখনো কি ভেবে দেখেছেন কেন? চোখ ব্যাথা বা চোখ ভারি লাগার মূল কারণ বা মূল সমস্যা মূলত আমাদের মস্তিষ্ক থেকে সৃষ্টি হয়। তাহলে চলুন চোখ ভারি লাগার কারণ এবং বাম চোখ কেন ব্যথা হয় তার সম্পর্কে বিস্তারিত।
চোখ ভারী লাগার কারণ

অনেক সময় আমাদের চোখের পিছনে যে ব্যথা বা চাপ অনুভূত হয় তা আমাদের মস্তিষ্ক থেকে উদ্ভূত হয়। আমাদের মাথার পেছনে এমন একটা অংশ রয়েছে যা খুবই চাপ পড়ার কারণে অনেক সময় আমাদের মাথা ব্যথার প্রভাব চোখের উপর এসে পড়ে। যদি চোখ ভারি লাগার কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

চোখের পাতা ভারী

এটি ptosis বা dermatochalasis নামে পরিচিত একটি মেডিকেল অবস্থাকে বোঝায়, যেখানে উপরের চোখের পাতা ঝরে যায়। চোখের পাতা ঝুলে পড়া আপনাকে আপনার চেয়ে বেশি ক্লান্ত দেখাতে পারে এবং কিছু ক্ষেত্রে এটি আপনার দৃষ্টিকেও প্রভাবিত করতে পারে।এই সমস্যাটি অনেক কারনে হতে পারে,যেমন শারীরিক দুর্বলতা, মানসিক দুশ্চিন্তা,প্রেসার লো হয়ে যাওয়া,সাইনাসের সমস্যা আরো অনেক কারনে হতে পারে।আপনি চেষ্টা করুন সব সময় নিজেকে হাইড্রেটেড রাখতে। প্রচুর জল পান করুন,পুষ্টিকর খাদ্য খান,ডিপ্রেশন কাটানোর ব্যবস্থা করুন।

বাম চোখ ব্যথার কারণ

চোখের ব্যথা শুষ্ক চোখের সিন্ড্রোম, কনজেক্টিভাইটিস, সংক্রমণ এবং অন্যান্য হালকা বা গুরুতর অবস্থার কারণে হতে পারে। মাথাব্যথা, সাইনাস সংক্রমণ এবং অপটিক স্নায়ুর সমস্যাও আপনার চোখকে আঘাত করতে পারে।চোখের পাতা কুঁচকে যাওয়ার একটি সাধারণ কারণ হল চোখের মায়োকিমিয়া । 
এটি সৌম্য এবং অন্যান্য সমস্যার দিকে পরিচালিত করে না। অকুলার মায়োকিমিয়া হতে পারে ক্লান্তি, অত্যধিক ক্যাফেইন বা মানসিক চাপের কারণে। ক্রমাগত, ঘন ঘন চোখ নাড়ানোর একটি কারণ হল বেনাইন এসেনশিয়াল ব্লেফারোস্পাজম নামক একটি অবস্থা।

চোখ খচখচ করলে করণীয়

আমাদের সমস্যা হলো, চোখ চুলকানো বা খচখচ করলে আমরা সাথে সাথে আমরা চোখে হাত দিয়ে দেই। চোখে চুলকানো বা ময়লা হওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার। এমন হলে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে এবং চিকিৎসা নিতে হবে। চোখে বারবার হাত দেওয়া যাবে না। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক চোখ খচখচ করলে কি কি করা যাবে না।-
  • জোরে চোখ কচলানো যাবে না
  • যদি মনে হয় কোনো কিছু বিঁধে আছে, তবে স্পর্শ না করাই ভালো
  • স্টেরয়েডজাতীয় ড্রপ ব্যবহার করা যাবে না
  • কারখানায় কাজ করার সময় যথাযথ প্রতিরোধক ব্যবস্থা যেমন হেলমেট বা সানগ্লাস ইত্যাদি অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে।

চোখের নার্ভের সমস্যার সমাধান

এতে অতিরিক্ত রক্তে শর্করা বা ডায়াবেটিসের কারণে অপটিক নার্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রোগ বাড়ার সাথে সাথে রেটিনায় রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়, যার ফলে দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়ে যায়। যদিও তাদের প্রত্যেকেই অপটিক স্নায়ুকে ভিন্নভাবে আক্রমণ করে, তবে চূড়ান্ত পরিণতি হল অপটিক নার্ভের মৃত্যু, যদি চিকিৎসা না করা হয়।

নার্ভকে সুস্থ রাখতে চাইলে নিয়মিত বাদাম খাওয়া খুবই জরুরি। আসলে বাদাম হল বি ভিটামিনের ভাণ্ডার। আর এই ভিটামিন কিন্তু নার্ভের নানা সমস্যা প্রতিরোধ করার কাজে সিদ্ধহস্ত। তাই নিয়মিত বাদাম খেলে নার্ভের জ্বালা, যন্ত্রণা থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া যাবে।
অপটিক স্নায়ু নষ্ট হয়ে গেলে স্নায়ু কোষ পুনরুত্পাদন বা চোখ ও মস্তিষ্কের মধ্যে সংযোগ পুনরুদ্ধার করার জন্য কোনও কার্যকর চিকিত্সা নেই । এটি ক্ষেত্রের একটি প্রধান বাধা এবং অপটিক নিউরোপ্যাথি-সম্পর্কিত অন্ধত্বে ভুগছেন এমন যথেষ্ট সংখ্যক রোগীর কারণে এটি অবশ্যই অতিক্রম করতে হবে।

চোখের সাদা অংশ লাল হওয়ার কারণ

চোখের ওপর চাপ বাড়া বা গ্লুকোমার কারণে চোখ লাল হয়। চোখে কোনো আঘাত পেলে লাল হতে পারে। কন্টাক্ট লেন্স যারা ব্যবহার করেন তাদের কন্টাক্ট লেন্স মেয়াদোত্তীর্ণ হলে চোখ লাল হবে এবং কন্টাক্ট লেন্সের কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকেও এমন হতে পারে। চোখের মেকআপে নিম্নমানের প্রসাধনী ব্যবহারের ফলে চোখ লাল হয়ে যায়।

চোখের সাদা অংশ (স্ক্লেরা) লাল দেখাতে পারে যখন পৃষ্ঠের জাহাজগুলি বড় হয়ে যায় । এটি যান্ত্রিক জ্বালা, পরিবেশগত বিরক্তিকর (যেমন অত্যন্ত শুষ্ক বায়ু, অতিরিক্ত সূর্যের এক্সপোজার), অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া, সংক্রমণ এবং অন্যান্য চিকিৎসা অবস্থার কারণে হতে পারে।

চোখের নার্ভ শুকিয়ে গেলে করণীয়

দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটারে কাজ করার ফলে হঠাৎ চোখে জ্বালাপোড়া ভাব, চুলকানি, খচখচানিসহ নানা অস্বস্তি হয়ে থাকে প্রায়ই। চোখের শুষ্কতার কারণে এমনটি হয়ে থাকে। চোখের ওপর পানির পাতলা আস্তরণ রয়েছে, যা চোখ সুস্থ রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। 
এই পানি যদি কমে যায়, তাহলে চোখ শুকিয়ে যায়।এসি বা ফ্যানের সরাসরি বাতাস, ঘরে আর্দ্রতা কম থাকা, শুষ্ক জলবায়ু ও বায়ু দূষণের কারণেও ড্রাই আই হতে পারে।
  • প্রচুর পরিমাণ পানি খেতে হবে
  • চোখের আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারে, এমন চোখের ব্যায়াম করতে হবে।
  • পানিযুক্ত ফল যেমন তরমুজ, শসা, স্ট্রবেরি, পিচ ইত্যাদি খাওয়া ভালো
  • কফি, অ্যালকোহল ও ক্যাফিনযুক্ত অন্যান্য পানীয় কমাতে হবে।

চোখ ব্যথা দূর করার উপায়

গরম সেঁক দেওয়া
চোখের ওপর গরম সেঁক দিলে অশ্রুগ্রন্থি থেকে জল বেরিয়ে আসে। চোখের পেশির চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে এই পদ্ধতি অনেকটাই সাহায্য করে। চোখে ব্যথা নিয়ে ব্যায়াম করতে না পারলে গরম সেঁক দিয়ে আগে ব্যথা কমিয়ে নিন।
শসা
চোখের নিচের কালোদাগ ও ফোলাভাব দূর করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি রূপচর্চায় যেভাবে ব্যবহার করা হয় সেভাবে ব্যবহার করলে চোখের ব্যথাও দূর করে এই সবজি।
কান্না করা
আমাদের চোখের কান্নার পানিতে এক ধরনের জিলেটিকো উপাদান থাকে। যা আমাদের চোখের ভেতরের ময়লা দূর করতে সাহায্য করে।
ঠান্ডা পানি ব্যবহার করা
চোখ ব্যথা হয়ে থাকলে চোখে অবশ্যই নরম কোনো সুতার কাপড় ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে তার চোখে বারবার মালিশ করতে হবে ফলে চোখ ব্যথা থেকে আমরা দ্রুত মুক্তি পাবো।

লেখক এর মন্তব্য

চোখ ব্যথা বা চোখ ভারি লাগা কোন সামান্য বিষয় নয় ! এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত চিন্তার বিষয়। তাই চোখ ব্যথা এবং চোখ ভারি লাগা থেকে মুক্তি পেতে উপরের বিষয়গুলো ভালোভাবে আয়ত্ত করতে হবে। যার ফলে আপনি নিজের সুস্থতা নিশ্চিত করতে পারবেন। আশা করা যায় আজকের আর্টিকেলটা আপনার অনেক কাজে আসবে।
আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই বন্ধু বান্ধবের মাঝে শেয়ার করে তাদেরও জানার সুযোগ করে দিন। এরকম নিত্য নতুন সঠিক এবং নির্ভুল তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি প্রতিনিয়ত ভিজিট করতে পারেন। এরকম তথ্যবহুল বিষয় নিয়ে নিয়ম মত আমাদের ওয়েবসাইটে পাবলিশ করা হয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১