তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত

প্রিয় পাঠক, তাহাজ্জুদ সালাত অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ একটি সালাত। তাই আজকের এই আর্টিকেলটিতে তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে এবং তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব নিয়ে আরো বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব ফজিলত।
তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত
আপনি যদি তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আমাদের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে। আশা করা যায় পোস্টটি পড়ার পরে আপনার আর কোন প্রশ্ন থাকবে না তাহাজ্জুদ সম্পর্কে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে পড়া শুরু করা যাক

তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার নিয়ম

তাহাজ্জুদ আরবি শব্দ। এর অর্থ রাতের শেষ অংশে ঘুম থেকে উঠে ইবাদত করা অর্থাৎ সালাত আদায় করা। তাহাজ্জুদ সালাতের ব্যবহার পবিত্র কোরানে রয়েছে। যে সমস্ত ইবাদতের মাধ্যমে একজন মানুষ মহান আল্লাহতালার খুব নিকটবর্তী বা কাছে যেতে পারে সেই ইবাদত গুলোর মধ্যে একটি হলো তাহাজ্জুদের সালাত। 
তাহাজ্জুদ সালাতের নিয়ম নিয়ম গুলো হল-রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাহাজ্জুদের সালাত ২ রাকাত, ২ রাকাত করে তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করেছিলেন। কখনো ৪ রাকাত, কখনো ৮ রাকাত, কখনো ১২ রাকাত সালাত আদায় করেছিলেন। তবে ২ রাকাত তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করলেও সালাত হবে।

যেকোনো সুরা দিয়ে তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করা যায়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লম্বা কেরাত, সূরা, রুকু করতেন। তাই তাহাজ্জুতের সালাতের লম্বা কেরাত পড়া উত্তম।

তাহাজ্জুদ নামাজ এর নিয়ম

প্রথমে তাকবীরে তাহরীমা -আল্লাহু আকবার বলে নিয়ত করা।
তারপর ছানা পাড়া।
সূরা ফাতিহা পড়া
সূরা ফাতিহার সাথে অন্য কোন সূরা মিলিয়ে পড়া অর্থাৎ কেরাত পড়া ।
তারপর, অন্যান্য নামাজের মত করে রুকু সেজদা করা।
এমনভাবে দ্বিতীয় রাকাত ও আদায় করা, তারপর তাশাহুদ, দুরুদ শরীফ , দোয়া মাসুরা আদায় করে সালাম ফেরানোর মাধ্যমে নামাজ শেষ করা।

এমনভাবে দুই দুই রাকাত করে মোট ৮ রাকাত তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করা উত্তম।তারপর যদি ভিতরে নামাজ থাকে তাহলে ভিতরের সালাত আদায় করে নেওয়া উচিত।

তাহাজ্জুদ সালাতের নিয়ত

                    نَوَيْتُ اَنْ اُصَلِّىَ رَكَعَتِى التَّهَجُّدِ - اَللهُ اَكْبَر

অর্থ: দুই রাকাত তাহাজ্জুদ সালাতের নিয়ত করছি, অতঃপর -আল্লাহু আকবার-বলে নিয়ত বেঁধে নামাজ শুরু করা।
বাংলা নিয়ত: আমি আল্লাহর ওয়াস্তে কেবলমুখী হয়ে দুই রাকাত তাহাজ্জুদ সালাত আদায়ের নিয়ত করলাম তারপর-আল্লাহু আকবার বলে নিয়ত বাধা।

তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব

তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক।রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সকল ফরজ নামাজের পর শ্রেষ্ঠ নামাজ হলো তাহাজ্জুদের নামাজ তথা রাতের নামাজ। তাহাজ্জুদ নামাজের অনেক গুরুত্ব ফজিলত রয়েছে, যারা বিনা হিসাবে জান্নাতে যেতে পারবেন তাদের মধ্যে এক শ্রেণীর মানুষ হলেন যারা তাহাজ্জুদের সালাত খুবই যত্ন সহকারে আদায় করবে। 
আল কুরআনের বিভিন্ন সূরায় এই নামাজের প্রতি তাগিদ দেওয়া হয়েছে। ফরয সালাতের পর অন্যান্য নফল নামাজের মধ্যে তাহাজ্জুদ সালাতের গুরুত্ব ফজিলত সবচেয়ে বেশি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহতালা দুনিয়ার আসমানে নেমে আসেন প্রতি রাতের যখন এক-তৃতীয়াংশ বাকি থাকে তখন তিনি আরো বলেন, আল্লাহর নিকট অতি প্রিয় দাউদ আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নামাজ।

কারণ তিনি অর্ধেক রাত ঘুমাতেন এবং রাতের তৃতীয় ভাগে নামাজ আদায় করতেন।আল্লাহ তাআলা প্রতি রাতের শেষ অংশে দুনিয়ার আসমান-জমিনে বিরাজমান হন সকলের চক্ষু অগোচরে। মহান আল্লাহতালা বলতে থাকেন, কোন প্রার্থনাকারী আছে কি? যার প্রার্থনা আমি কবুল করব।

প্রয়োজন প্রার্থনার লোক আছে কি? যার প্রার্থনা আমি পূর্ণ করব। কোন ক্ষমাপ্রার্থী আছে কি? যাকে আমি ক্ষমা করব। তা তো সালাদের অনেক হুজুরের গুরুত্ব রয়েছে যা ক্ষুদ্র পরিসরে বলে শেষ করা যাবে না। এছাড়াও হাদীস শরীফে বলা হয়েছে, দুই রাকাত তাহাজ্জুদ সালাত -আসমান জমিনের মধ্যে যা যত সম্পদ আছে তার চেয়ে অধিক উন্নত।
তাদের সালাত আমাদের মনকে সুশান্ত করে রাখে। এই সালাতের মাধ্যমে আল্লাহতালার অতি প্রিয় বান্দা অন্তর্ভুক্ত হওয়া যায়। তাহাজ্জুদের সালাত আদায়কারী বান্দার জন্য আল্লাহতালার কাছে কল্পনা দিত দামী পুরস্কার রয়েছে। তাই বলা যায় তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব ফজিলত আমাদের জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত

  • যে সকল নফল ইবাদত মানুষকে পরকালে মুক্তি দেবে, এবং ফরজের ঘাটতি পূরণ করবে সেগুলোর মধ্যে একটি হল তাহাজ্জুতের সালাত। রাতের শেষ ভাগে ঘুম থেকে উঠে যে নামাজ আদায় করা হয়, সেটাকে বলে তাহাজ্জুদের সালাত বা রাতের নামাজ।
  • মহানবী হযরত মুহাম্মদ সালাল্লাহু সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, রমজানের পর সর্বশ্রেষ্ঠ রোজা হল আল্লাহর মাস মহরমের রোজা। আর ফরজ নামাজের পর সর্বশ্রেষ্ঠ নামাজ হলো রাতের নামাজ অর্থাৎ তাহাজ্জুদের নামাজ। (মুসলিম, হাদিস:১১৬৩)
  • আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেন, আর রাতের কিছু অংশে তাহাজ্জুদ পড়বে। এটা তোমাদের অতিরিক্ত দায়িত্ব। অচিরেই তোমাদের রব তোমাকে প্রশংসিত স্থানে প্রতিষ্ঠিত করবেন। (সূরা বনী ইসরাইল, আয়াত:৭৯)

লেখকের মন্তব্য

সম্মানিত পাঠক, উপযুক্ত আলোচনার মাধ্যমে আপনি হয়তো এতক্ষণ বুঝতে পেরে গেছেন তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব ফজিলত সম্পর্কে। তাহাজ্জুদ নামাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি নামাজ। এটির ফলে বান্দা আল্লাহতালার খুবই কাছে আসতে পারে। আল্লাহ তাআলার প্রিয় হতে পারে।
তাই আজকের এই আর্টিকেলটা যদি আপনার ভালো লাগে, তাহলে বন্ধু বান্ধবের মাঝে শেয়ার করে তাদেরও জানার সুযোগ করে দিন। আপনি চাইলে প্রতিনিয়ত আমাদের এই ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন। এখানে প্রতিনিয়ত সঠিক এবং নির্ভুল তথ্য তুলে ধরা হয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১