বর্তমানে স্বল্প খরচে সবচেয়ে ভালো মানের কিছু ব্যবসার আইডিয়া-২০২৪ -লাভজনক ব্যবসাগুলো কি কি?

প্রিয় পাঠক, আপনি কি ব্যবসা করতে চাচ্ছেন? তাহলে, আমি আজকের এই আর্টিকেলটিতে জানাবো বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া গুলো কি কি? এবং ফার্মেসি ব্যবসা সহ আরো অনেক ব্যবসা নিয়ে আজকের এই পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করব।
বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া
আমরা সকলেই ব্যবসা করে উপার্জন করতে চাই। কিন্তু, কোন ব্যবসা করলে অল্প সময়ে লাভজনক হওয়া যাবে এবং কোন ব্যবসা আমাদের জন্য কল্যাণজনক হবে তা আমরা অনেকেই জানি না। তাই আপনি যদি বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া পেতে চান,তাহলে মনোযোগ সহকারে আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ুন।

ভূমিকা: ব্যবসা কি

আমরা সকলে ব্যবসা করতে চাই। কিন্তু এর আভিধানিক অর্থ আমরা কেউ জানি না ।ব্যবসা শব্দের অর্থ হলো- ব্যস্ত থাকা। অর্থাৎ সমষ্টিগতভাবে অথবা ব্যক্তিগতভাবে অর্থ উপার্জন করার কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখার নামই হলো ব্যবসা। ব্যবসা বলতে বোঝায়, নিজের মূলধনকে ব্যবহার করে কোন পণ্য বা সেবা বা কোন বস্তু বা কোন সামগ্রী অন্যের কাছে ক্রয় বিক্রয় করা।
বিক্রি করে তা থেকে অর্থ উপার্জন করা তাকে বলা হয় ব্যবসা। মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে উৎপাদন ও বন্টন করার মাধ্যমে সকল বৈধ ক্রিয়াকলাপকে বলা হয় ব্যবসা। বর্তমানে অনেক মানুষ চাকরির পেছনে ছুটে বেড়াচ্ছে, আবার কিছু মানুষ অল্প পুঁজি বা মূলধন খাটিয়ে বিভিন্ন ধরনের খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতা এবং উদ্যোক্তা হয়ে কাজ করছে। আশা করি উপরের আর্টিকেলটি পড়ে আপনি বুঝে গেছেন।

ব্যবসা কত প্রকার ও কি কি

উপরোক্ত আলোচনা থেকে আপনি অনেকটাই ধারণা নিতে পেরেছেন যে ব্যবসা কাকে বলে ?এবং ব্যবসা কি? আজকের এই আর্টিকেলটি যদি আপনি অনুসরণ করেন তাহলে আপনি একজন পুঁজিবাদী, এবং সফল ব্যবসায়ী হতে পারবেন।

আমরা অনেকেই সফল ব্যবসায়ী হতে চাই, কিন্তু সঠিক গাইডলাইনের কারণে হতে পারে না। আপনি যদি উপরোক্ত আলোচনা সঠিকভাবে বুঝতে পারেন তাহলে আমি এখন আপনাকে জানাতে যাচ্ছিএ-ব্যবসা কত প্রকার ও কি কি। মালিকানার ভিত্তিতে ব্যবসা মূলত ৫ প্রকার। যথা-
  • এক মালিকানা ব্যবসা।
  • অংশীদারি ব্যবসা।
  • যৌথ মূলধনীয় অথবা কোম্পানি ব্যবসা।
  • সমবায় সমিতি ব্যবসা।
  • রাষ্ট্রীয় ব্যবসা।

বর্তমানে সবচেয়ে ১০ টি লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া

রেস্টুরেন্টের ব্যবসা
প্রিয় পাঠক, বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া গুলোর মধ্যে প্রথমেই যেটি দেখা যায় তা হল রেস্টুরেন্ট।আপনি যদি রেস্টুরেন্টের ব্যবসার কথা চিন্তা করে থাকেন তাহলে এ আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়তে থাকুন। রেস্টুরেন্ট এর ব্যবসার জন্য প্রথমে আপনাকে যে বিষয়টি ফোকাস করতে হবে তাহলে ভালো একটি লোকেশন।

আপনার রেস্টুরেন্টের ব্যবসা শুরু করার আগে ভালো একটি লোকেশন ঠিক করে নিতে হবে।ভালো একটি শপিং সেন্টারের পাশে, বাজারে, জনকীর্ণ এলাকায়, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ইত্যাদি বিভিন্ন জায়গা বিজনেস এরিয়ার জন্য সবচেয়ে ভালো হয়।

বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় রেস্টুরেন্টের লোকেশন হতে পারেযেমন-বনানী, গুলশান, উত্তরা এই সমস্ত নামকরা এলাকায় রেস্টুরেন্ট দিলে ভালো ক্রয় বিক্রয় হবে।এ সমস্ত এলাকায় অনেক রেস্টুরেন্ট গড়ে উঠলেও, যত রেস্টুরেন্ট থাকুক না কেন, সকলের ব্যবসায়ী কিন্তু ভালো চলে। কারো ব্যবসা খারাপ হয় না।
আপনি চাইলে প্রায় ২ থেকে ৩ লক্ষ টাকা দিয়ে রেস্টুরেন্টের ব্যবসা শুরু করতে পারেন।আজকাল প্রায় মানুষই ব্যবসা করতে চান ।বর্তমানে তরুণ উদ্যোক্তাদের ব্যবসার প্রতিযোগ বেশি।রেস্টুরেন্টে খাবার খেতে সকলের পছন্দ করে, সকলের রেস্টুরেন্টের সময় কাটাতে ভালো লাগে। তরুণ থেকে শুরু করে বৃদ্ধরা রেস্টুরেন্টে সময় কাটাতে পছন্দ করে, তাই পরিশেষে বলা যায়, রেস্টুরেন্টের ব্যবসা অত্যন্ত লাভজনক।

ফার্মেসি ব্যবসা
অল্প পুঁজি দিয়ে ওষুধের ব্যবসা আইডিয়া করা অনেকটাই ভালো। ওষুধের ব্যবসায় অল্প কিছু প্রথা অনুসরণ করলেই উন্নতি লাভ করা যায়। সফলতার দ্বার কিনারায় পৌঁছানো যায়। প্রথমে উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করতে হবে। ওষুধের দোকানের জন্য, সবচেয়ে উপযুক্ত স্থান হলো-কোন ক্লিনিক বাহাসপাতালের আশেপাশের বা সামনে।

কিন্তু, কোন শপিং মল বা যেখানে মানুষ কেনাকাটা করতে যায়, কাঁচাবাজার যেখানে মানুষ যাওয়ার পর ওষুধ কেনার কোন পরিকল্পনা থাকে না এমন কোন জায়গায় ফার্মেসী দিলে আপনি নিশ্চিত লস এর সম্মুখীন হবেন। তাই আপনাকে, লোকাল কোন স্থানে এলাকায় ফার্মেসির ব্যবস্থা করতে হবে। ফার্মেসি ব্যবসা করার জন্য প্রথমে আপনাকে অবশ্যই একটি বৈধ লাইসেন্স এর ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে আপনি ফার্মেসিতে সফলতা অর্জন করতে পারবেন।

মোবাইল ফোনের দোকান
আজকাল মোবাইল ফোন ব্যবহার করে না এমন লোক খুঁজে পাওয়া খুবই মুশকিল। দেশের প্রায় সব লোকে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। প্রথমে অল্প কিছু টাকা নিয়ে আপনি মোবাইল ফোনের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। তারপর আস্তে আস্তে আপনার দোকানটাকে বড় করতে থাকবে। ব্যবসাটাকে সমৃদ্ধ করবেন। তাহলে আপনি সফল উদ্যোক্তা হতে পারবেন।

তাই, মোবাইলে ফোনের ব্যবসার মাধ্যমে অনেক জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারে। তাই আপনি দেরি না করে, যদি ভালো এবং সফল উদ্যোক্তা হতে চান তাহলে মোবাইলের ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

কাপড়ের ব্যবসা
বর্তমানে কাপড়ের ব্যবসা অত্যন্ত লাভজনক একটি ব্যবসা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা সকলেই চাই নতুন নতুন জামা কাপড় কিনতে ।প্রতিনিয়ত আমাদের চাহিদা থাকে নতুনের উপর। বর্তমানে বাংলাদেশের যেমন জনসংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে, তেমনি তার সঙ্গে বেড়ে চলেছে বস্তার শিল্পের চাহিদা।
আপনি যদি কাপড়ের ব্যবসা করতে চান, তাহলে প্রথমে জায়গা ঠিক করতে হবে। এবং আপনি কোন কোন কাপড় নিয়ে ব্যবসা করতে চান তার তালিকা তৈরি করতে হবে।যেমন-আপনি কাজ করতে পারেন ছেলেদের জিন্স প্যান্ট নিয়ে, মেয়েদের শাড়ি, টি- শার্ট, পায়জামা, শীতের পোশাক, ছোট বাচ্চাদের জামা কাপড় ইত্যাদি নিয়ে।

কাপড়ের ব্যবসার ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হয় আপনি যদি নিজে কাপড় তৈরি করে বিক্রি করেন। আপনি প্রথমে, সামান্য বিনিয়োগ করে কাপড়ের ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। পরে ধীরে ধীরে আপনি ব্যবসাকে বড় করতে পারবেন।

গরুর খামার
বর্তমানে আমাদের তরুণ সমাজের মধ্যে গরুর খামার করার ব্যবসাটিতে তারা ঝুকে পড়েছে। কারণ, গরুর খামার থেকে অনেক উপায়ে লাভ করা যায়। প্রথমত, গরুর দুধ বিক্রি করা যাবে। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে চেষ্টা করবেন, বিভিন্ন ধরনের উচ্চমানের কোম্পানি যেমন মিল্কভিটা, প্রাণ মিল্ক এদের মত ভাল কোম্পানি কিংবা মিনা বাজার এদের সাথে চুক্তিতে দুধ বিক্রি করতে।

এমন ভাবে দুধ বিক্রি করার ফলে, আপনার যেমন লাভ হবে তেমনি আপনার খামারটাকে বড় করার সুযোগ হবে। দ্বিতীয়ত, কম দামে কিছু বাছুর কিনে ঈদ কিংবা বিশেষ মৌসুমগুলোতে সেটা বিক্রি করলে আপনি ভাল টাকা উপার্জন করতে পারবেন। তৃতীয়ত, বিভিন্ন নার্সারি গুলোতে গাছের পরিচর্যা করার জন্য গোবরের প্রয়োজন হয়।

এদের সাথে আপনি গোবর বিক্রির চুক্তি করতে পারেন এর ফলে আপনি ভাল মনে হওয়ার জন্য করতে পারবেন। এছাড়াও আপনি গরু কিনে কিছুদিন ভালোভাবে খাওয়ানোর পর গরুটাকে বিক্রি করে ভালো মানের মুনাফা অর্জন করতে পারবেন।

হস্তশিল্পের ব্যবসা
বর্তমানে বাংলাদেশের হস্তশিল্পের চাহিদা বেড়ে গিয়েছে। এছাড়াও হস্তশিল্পের চাহিদার যুগ যুগ ধরে রয়ে গেছে। আমরা সকলে ঘর সাজাতে পছন্দ করি। সখের বসে কিম্বা ঘর সাজানোর জন্য হলেও মানুষ হস্তশিল্প কিনা থাকে। আপনি চাইলে, এ সমস্ত হস্তশিল্প নিজের হাতে তৈরি করে বিশ্বাসের সহিত খুচরা অথবা পাইকারি বিক্রি করতে পারেন। এছাড়াও আপনি এই হস্তশিল্প গুলোকে অনলাইনে অথবা দোকান খুলে ব্যবসা করতে পারেন। যার ফলে আপনি অনেক মুনাফা অর্জন করতে পারবেন।

নার্সারির ব্যবসা
নার্সারি শব্দটি শুনলেই মনে হতে পারে, এটি আবার কোন ব্যবসা হল নাকি। আসলে নার্সারির মাধ্যমে অনেক মুনাফা অর্জন করা যায়। নার্সারির ব্যবসা করার জন্য আপনাকে লোকেশন কোন একটা শহর ঠিক করতে হবে। কারণ, শহরের অনেক লোকজন এবং অধিকাংশ লোকজন তাদের ফ্লাটে, বারান্দায়, ছাদে, ফুলে টবে ফুল কিংবা বন সই জাতীয় গাছ লাগাতে পছন্দ করে।

কিন্তু, এই নার্সারি আসলে পুরনো ধরনের নার্সারি না করে একটু স্মার্ট পদ্ধতিতে নার্সারি করলে খুব সহজে লাভবান হওয়া যাবে। তাহলে আপনাকে যদি এই ব্যবসার আইডিয়া ভালো লেগে থাকে, তাহলে আপনি নার্সারি ব্যবসা করতে পারেন অল্প পুজিতে আপনি অনেক লাভবান হতে পারবেন।

কোর্স বিক্রি করে আয়
বর্তমানে বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের কোর্স চালু হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের ফ্রিল্যান্সিং কোর্স যেমন-ডিজিটাল মার্কেটিং, ওয়েব ডেভলপিং, ইথিকাল হ্যাকিং, ইত্যাদি কোর্স। এ সকল কোর্স আপনি যদি একজন কোর্স এক্সপার্ট হয়ে থাকেন তাহলে একটি কোর্স দিয়ে আপনি অনেক ব্যবসা করতে পারবেন। আপনি একবার কোর্স বানালে।
সেই কোর্স টি বারবার সকলের কাছে বিক্রি করতে পারবেন এভাবে আপনি প্রতিদিন অনেক পরিমাণে মুনাফা অর্জন করতে পারবেন। বর্তমানে এই কোড বিক্রির আইডিয়াটি অনেক ভালো। এটির মাধ্যমে অনেক টাকা ইনকাম করা যাচ্ছে।

ক্যাটারিং(Catering)
বর্তমানে আর একটি অন্যতম লাভজনক ব্যবসা হল ক্যাটারিং এর ব্যবসা। বিয়েবাড়ি সহ থেকে বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান, অফিসের বার্ষিক সম্মেলন এ ক্যাটারিং এর চাহিদা অত্যন্ত ব্যাপক। বিভিন্ন ধরনের ছুটির দিনে এছাড়াও পার্ট টাইম জব হিসেবে ক্যাটারিং এর চাহিদা অনেক বেশি। বিভিন্ন ধরনের বড় বড় শহর, উৎসবে এই ক্যাটারিং দের ডাক পড়ে।

হোম ডেলিভারি বয়
বর্তমানে আমরা সকলে অলস হয়ে গেছি। আমরা কেউ বাড়ির বাইরে বের হতে চাই না। আমরা ঘর থেকে সবকিছু করতে চাই। তাই, বিভিন্ন ধরনের পণ্য সামগ্রী যেমন মেয়েদের কসমেটিক্স, বিভিন্ন ধরনের খাবার ইত্যাদি হোম ডেলিভারি দেওয়ার মাধ্যমে মোটা টাকা ইনকাম করা যায়। অল্প টাকা বিনিয়োগ করে মানুষের কাছে অন্য সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে, অনেক ইনকাম করা যেতে পারে।

লেখকের শেষ মন্তব্য

সম্মানিত পাঠক বৃন্দু আপনি উপরের যদি সবগুলো ভালোভাবে মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন, তাহলে এতক্ষণ হয়তো বুঝে গেছেন বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসার আইডিয়াটি কি এবং কোন ব্যবসাটি আপনার জন্য ভালো হবে। এবং কোন ব্যবসা থেকে আপনি অধিক পরিমাণে মুনাফা অর্জন করতে পারবেন।
আপনি যদি উপরের ট্রিক্স গুলো অনুসরণ করেন তাহলে আপনি অবশ্যই একজন সফল ব্যবসায়ী এবং উদ্যোক্তা হতে পারবেন। আমাদের আর্টিকেলটি যদি ভালো লাগে তাহলে নিয়মিত আমাদের সঙ্গে থাকুন এবং প্রতিনিয়ত আমাদের পেজটি ভিজিট করতে পারেন এরকম সঠিক এবং নির্ভুল তত্ত্ব নিয়ে নিয়মিত আপনাদের সামনে হাজির হব।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১