সালাতুল হাজত নামাজের উপকারিতা -সালাতুল হাজতের নামাজ

 প্রিয় পাঠক, সালাতুল হাজত নামাজের উপকারিতা সম্পর্কে যদি জানতে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য, আজকে সালাতুল হাজত নামাজের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

সালাতুল হাজত নামাজের উপকারিতা
মানুষ সামাজিক জীব। সমাজে বসবাস করতে গেলে তাকে নানা সমস্যার সম্মুখীন করতে হয়। কিন্তু আমাদের মাঝে হঠাৎ করে এমন সমস্যার সম্মুখীন হয় যা কোন মানুষ সমাধান করতে পারে না। এমন সময় মানুষের কি করা উচিত? এছাড়াও হঠাৎ করে এমন অসুস্থতা এবং অসুবিধা হয় যার সমাধান কোন মানুষ যেতে পারে না।

এমন সময় সালাতুল হাজত খুবই কার্যকরী একটি সালাত। সঠিকভাবে চাওয়ার মাধ্যমে আল্লাহতালা আমাদের মনের আশা পূর্ণ করে। তাহলে আমাদের অবশ্যই সালাতুল হাজতের নামাজ পড়ার নিয়ম ও ফজিলত সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতে হবে।আপনি যদি সালাতুল হাজত সম্পর্কে পূর্ণ ধারণা অর্জন করতে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

ইসলামী পরিভাষায় সালাতুল হাজত অর্থ কি

ইসলামী পরিভাষায় সালাতুল হাজত অর্থ কি? এ প্রশ্ন আমাদের সকলেরই হয়। তাহলে জেনে নিন-হাজত /বিশেষ্য পদ/ বিচারাধীন আসামীদিগের জন্য সময়িক কারাগার; বিচারের পূর্বে অস্থায়ী ভাবে পুলিশের জিম্মা। সালাতুল হাজাত বা 'প্রয়োজনের নামাজ' একটি বিশেষ নফল ইবাদত। মানুষের যখন বিশেষ কিছুর প্রয়োজন হয়।
কিংবা শারীরিক-মানসিকভাবে কোনো দুশ্চিন্তা দেখা দেয় তখন এ নামাজ পড়তে হয়। রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন কোন সংকটে পড়তেন, তখন সালাতে রত হতেন।এই বিষয়ে হযরত ইবরাহিম (আঃ) এর ঘটনা স্মরণ করা যেতে পারে।সালাতুল হাজাত বা 'প্রয়োজনের নামাজ'— একটি বিশেষ নফল ইবাদত।

মানুষের বিশেষ কিছুর প্রয়োজন হলে কিংবা শারীরিক-মানসিকভাবে কোনো দুশ্চিন্তা দেখা দিলে এ নামাজ পড়তে হয়। সালাতুল হাজত একটি সাধারণ নফল নামাজ। এই নামাজ পড়ার নির্দিষ্ট কোনো দিন বাধা নেই, যে এতো দিন পড়তেই হবে।

সালাতুল হাজত নামাজ কত রাকাত

এই নামাজ পড়ার নির্দিষ্ট কোনো দিন বাধা নেই, যে এতো দিন পড়তেই হবে। তবে সালাতুল হাজত কত রাকাত সেটি আমাদের জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।'সালাতুল হাজত' নামাজের আলাদা কোনো নিয়ম নেই। স্বাভাবিক নামাজের মতোই উত্তমভাবে অজু করে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়বে। চাইলে চার রাকাতও পড়া যাবে।
সালাতুল হাজত হল মাত্র ২ রাকাত নফিল নামায এবং আর কিছুই নয় কোন বিশেষ দুআ কোন বিশেষ সূরা।২ রাকাত নফিল নামায পড়ার পর শান্তভাবে দরূদে ইব্রাহিম পাঠ করুন, এবং আসমা-ই-আজমের অনুসরণে যা চান তা আল্লাহর কাছে জিজ্ঞাসা করুন এবং তারপরে দুআ শেষে দরূদে ইব্রাহিম পাঠ করুন। খালাস।

সালাতুল হাজতের নিয়ম

সালাতুল হাজতের আলাদা কোনো নিয়ম নেই। স্বাভাবিক নামাজের মতোই উত্তমভাবে অজু করে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়বে। চাইলে চার রাকাতও পড়া যাবে। নামাজ শেষে আল্লাহ তাআলার হামদ ও ছানা (প্রসংসা) এবং নবী করিম (সা.) এর উপর দরুদ পাঠ।উদাহরণস্বরূপ, যখন কোনও মুসলিম কোনও সমস্যার সম্মুখীন হয় ।
সে আল্লাহর সাহায্য চায়, তখন সে সালাতুল হাজত পড়ে। সালাতুল হাজতের নামাজ পড়তে সময় হলে, ব্যক্তি আল্লাহর সামনে আসবে এবং তাকে আল্লাহর কাছে সাহায্য ও দয়া চাইতে হবে। এরপর তিনটি তাসবীহ পড়ে এবং পরবর্তী দুটি রাকাত নাফল নামাজ পড়ে সালাম ফিরিয়ে দেয়া হয়। তাহলে চলুন আরো কিছু নিয়ম জেনে নেওয়া যাক।-

  • প্রথমে আমাদের অজু করে কিবলামুখী হয়ে দাঁড়াতে হবে।
  • এরপর মহান আল্লাহতালার সাহায্য পাওয়ার উদ্দেশ্যে সালাতুল হাজত নামাজের 2 রাকাত নফল নামাজ নিয়ত করতে হবে।
  • ছানা দোয়া, সূরা ফাতিহা এবং এর সাথে যে কোন একটি সূরা মিলিয়ে সাধারণ নামাজের রুকু এবং সেজদা দিতে হবে। এভাবে দ্বিতীয় রাকাত নামাজ আদায় করতে হবে এবং তাশাহুদ, দুরুদ শরীফ এবং মাসুরা পাঠ করে সালাম ফিরিয়ে মোনাজাত ধরতে হবে।

সালাতুল হাজতের দোয়া

لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ الْحَلِيْمُ الْكَرِيْمُ سُبْحَانَ اللهِ رَبِّ الْعَرْشِ الْعَظِيْمِ الْحَمْدُ ِللهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ. اَسْأَلُكَ مُوْجِبَاتِ رَحْمَتِكَ وَعَزَائِمَ مَغْفِرَتِكَ وَالْغَنِيْمَةَ مِنْ كُلِّ بِرٍّ وَالسَّلاَمَةَ مِنْ كُلِّ إِثْمٍ لاَتَدَعْ لَنَا ذَنْبًا إِلاَّ غَفَرْتَهُ وَلاَ هَمًّا إِلاَّ فَرَّجْتَهُ وَلاَ حَاجَةً هِىَ لَكَ رِضَا إِلاَّ قَضَيْتَهَا يَا أَرْحَمَ الرَّاحِمِيْنَ‎


উচ্চারণঃ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহুল হালিমুল কারিম। সুবহানাল্লাহি রব্বিল আরশিল আযীম। আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামিন। আছআলুকা মু’জিবাতি রহমাতিকা অয়া আযা- ইমা মাগফিরাতিকা অয়াল গ’নিমাতা মিন কুল্লি বিররিউ অয়াস সালামাতা মিন কুল্লি ইছমিন লা তাদা’লানা- যাম্বান ইল্লা গাফারতাহু ওয়ালা হাম্মান ইল্লা ফাররাজতাহু অয়ালা হাজাতান হিয়া লাকা রিযান ইল্লা কযাইতাহা ইয়া আর হামার রাহিমিন।
অর্থঃ আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তিনি ধৈর্যশীল ও মহামহিম। মহান আরশের মালিক আল্লাহ তা’আলা খুবই পবিত্র। সকল প্রশংসা সারা বিশ্বের প্রতিপালক আল্লাহ তা’আলার জন্য। (হে আল্লাহ!) আমি তোমার নিকট তোমার রহমত লাভের উপায়সমূহ, তোমার ক্ষমা লাভের কঠিন ওয়াদা, প্রত্যেক ভাল কাজের ঐশ্বর্য এবং সকল খারাপ কাজ হতে নিরাপত্তা চাইছি।

হে মহা অনুগ্রহকারী! আমার প্রতিটি অপরাধ ক্ষমা কর, আমার প্রতিটি দুশ্চিন্তা দূর করে দাও এবং যে প্রয়োজন ও চাহিদা তোমার সন্তোষ লাভের কারণ হয় তা পরিপূর্ণ করে দাও।তাই বলা যায়, সালাতুল হাজতের দোয়াটি আমাদের ভালোভাবে এবং শুদ্ধভাবে পাঠ করতে হবে। কেননা দোয়া পাঠ ভুল হলে আমাদের নামাজ ভুল হয়ে যাবে।

সালাতুল হাজতের নিয়ত

নিয়ত অন্তরের সাথে সম্পৃক্ত। তাই অন্তর থেকে- আমি মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কিবলামুখী হয়ে দুই রাকাত হাজতের নামাজ আদায় করছি, আল্লাহু আকবার। এভাবে নিয়ত করে সালাত আদায় করলেই হবে, ঈন-শা-আল্লাহ।তবে আপনি চাইলে আরবিতে নিয়ত করতে পারেন। তাহলে সালাতুল হাজতের নিয়ত জেনে নিন।-

আরবি নিয়তের বাংলা উচ্চারণ – “নাওাইতুওয়া নুসাল্লিয়া লিল্লাহী তায়ালা রাকাতাই সালাতুল হাজত নাফলী রাসুল্লাহীতায়ালা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতীল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহ আকবর।”

সালাতুল হাজতের ফজিলত

সালাতুল হাজত পালনের কিছু সম্ভাব্য সুবিধার মধ্যে রয়েছে একজনের বিশ্বাসকে শক্তিশালী করা, মনের শান্তি ও স্বচ্ছতা অর্জন করা এবং আল্লাহর নৈকট্যের অনুভূতি।এটি একটি ঠান্ডা শীতকাল কাছাকাছি ছিল…ঠিক আছে এটা সেভাবে শুরু হয়নি কিন্তু ওয়ালাহ একাধিক অনুষ্ঠানে আমি এই 2টি সালাতের ফলাফল প্রত্যক্ষ করেছি।
কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হল এই সালাতগুলো না করা এবং তারপরে আমরা যা করতে চেয়েছিলাম তা ঘটতে চাই কারণ আল্লাহ আমাদের কিছু দেন না... এই সালাতগুলো আছে যাতে আমরা আল্লাহর সাথে আরও দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারি এবং যখন আমরা তা করি তখন আল্লাহ আমাদের প্রয়োজনের জবাব দেবেন। শুধু আমাদের হাত তুলে নিয়ে।

যাইহোক আমরা মাঝে মাঝে সমস্যায় পড়ি এবং শুধু এই প্রশ্নটি করেই আপনাকে আলহামদুলিল্লাহ বলা উচিত কারণ প্রতিকূলতার সম্মুখীন হলে সবাই আল্লাহর দিকে ফিরে যাওয়ার অনুপ্রেরণা পায় না। তবে আমাদের মনে রাখা উচিত যে যখন আমাদের দুআ কবুল হয় তখন শুকর করার জন্য আল্লাহর দিকে ফিরে যাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমরা বলতে পারি হাজতের নামাজ পড়ার নিয়ম ও ফজিলত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

লেখক এর মন্তব্য

সালাতুল হাজত এর নামাজ পড়ার মাধ্যমে অনেক ফায়দা অর্জন করা যায়। আল্লাহতালা দোয়া কবুল করেন। সমস্ত সমস্যা সমাধান মহান আল্লাহতালা কাছে চাইতে হবে। তিনি মহা দাতা। তাই সবসময় আমরা চেষ্টা করব নিজেকে সৎ এবং সুন্দরভাবে উপস্থাপন করে। তাই তাই সালাতুল হাজত নিজের মনের ইচ্ছাগুলো এবং চাওয়া পাওয়া গুলো পূরণের জন্য পড়ার চেষ্টা করব।
আরো পড়ুন: হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য সুষম খাদ্যের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা
সালাতুল হাজতের নামাজ পড়ার নিয়ম ও ফজিলত বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না।সম্মানিত পাঠক আজকের এই পোস্টটি ভালো লাগলে বন্ধু বান্ধবের সাথে শেয়ার করে দিন। তাতে তারাও জানতে পারবে। এবং আপনার দ্বারা একজন উপকৃত হবে। সঠিক এবং নির্ভুল তথ্য নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১