খালি পেটে নিম পাতার রস খেলে কি হয়-খালি পেটে নিম পাতার রস খাওয়ার উপকারিতা
খালি পেটে নিমপাতার রস খাওয়ার কারণে আমরা বিভিন্ন ধরনের রোগ বাধায় থাকি বেঁচে যাই।
বিশেষজ্ঞদের মতে নিয়মিত খালি পেটে নিম পাতা খাওয়া শুরু করলে রক্ত উপস্থিত
ক্ষতিকর উপাদান ধ্বংস হয়ে যায়। সেই সঙ্গে টক্সিক উপাদান গুলো বের হয়ে যায়।
নিম গাছ হল এমন একটি গাছ যার সবকিছু মানুষের উপকারে আসে।
আরো পড়ুনঃ ডাবের পানি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
ঔষধি গুনে ভরপুর এই গাছটির পাতা খালি পেটে খেলে অভিজ্ঞদের মতে শরীরের প্রায়
অর্ধেক রোগ ভালো হয়ে যায়। তাহলে চলুন খালি পেটে নিম পাতার রস খেলে কি হয় এবং এ
সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
খালি পেটে নিমপাতা খেয়ে সহজেই এলার্জির দূর করুন
এলার্জির কারণে ভুগে থাকেন অনেক মানুষই। এলার্জির যে কি যন্ত্রনা তা শুধু
ভুক্তভোগী মানুষেরাই জানে। এলার্জি দূর করতে অনেক মানুষ অনেক রকম প্রচেষ্টা করে
থাকেন এবং সুস্বাদু খাবার চোখের সামনে রেখেও খেতে পারেন না শুধুমাত্র এলার্জির
কারণে। যার কারণে আমাদেরকে অনেক সময় ভুগতে হয় পুষ্টিহীনতায়। কিন্তু তবুও দূর
করা যায় না এলার্জি।
এলার্জি দূর করতে হলে মেনে চলতে হবে কিছু বিশেষ নিয়মাবলী। কিন্তু এই বিশেষ নিয়ম
গুলো মেনে চলা সম্ভব হয় না অনেক কারণেই যার কারণে আমাদের এলার্জি ও দূর হয় না।
তাই আজকে এলার্জি দূর করার কিছু কার্যকর পদ্ধতি উল্লেখ করব। আজকে আপনাদের জানাবো
কিভাবে একটি পাতা দিয়ে এলার্জি সহজে দূর করবে। হ্যাঁ, একটি পাতা। আর সেই পাতাটি
হলো নিমপাতা। নিমপাতা হয়তো এলার্জি দূর করতে পারে এইটা আমরা অনেকেই জানি।
আরো পড়ুনঃ আপেল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
কিন্তু নিমপাতা কিভাবে খেলে এলার্জি দূর হয়ে যাবে চিরতরে তা আমরা অনেকেই জানিনা।
এক কেজি পরিমাণ নিম পাতা ভালোভাবে শুকিয়ে নিন। এই শুকনো নিমপাতা গুঁড়ো করুন
যেকোনো ব্লেন্ডারের অথবা পাটাই পিসে। তারপর এটি একটি পরিষ্কার পাত্রে ভরে
রাখো।
চা চামচের তিন ভাগের এক ভাগ নিম পাতার গুড়া, এক চা চামচ ইসুবগুলের ভুষি সহ এক
গ্লাস পানিতে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। তারপর ভালোভাবে চামচ দিয়ে মিশিয়ে নিন। এই
নিম পাতা এবং ইসরগুলির ভুষি সমৃদ্ধ পানি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক গ্লাস করে
খেতে হবে। তাহলে আশা করা যায় আপনার অ্যালার্জি সমস্যা সহজে ঘরোয়া পদ্ধতিতে দূর
হয়ে যাবে।
রক্ত পরিষ্কার করতে নিম পাতার রস খাওয়ার গুরুত্ব
ছোটবেলা থেকে যেইটাই আমরা খেয়ে আসছি যেমন ময়দাযুক্ত খাবার তেলেভাজা এই সবগুলো
জিনিস আমাদের পেটে গ্যাস ও অম্বল সৃষ্টি করে। পেট খারাপ হলে আমাদের খাওয়া খাবার
হজমকৃত জায়গায় পচতে শুরু করে। পচা খাবার আমাদের রক্তে মিশে রক্তকে নোংরা করে
দেয়। তাহলে, আমাদের শরীরের যে দুটি কিডনি আছে।
তার কাজ আমরা সকলেই জানি, এদের কাজ হল আমাদের রক্তকে পিউরিফাই করা যেহেতু আমাদের
রক্তের নোংরা থাকে সেহেতু কিডনির রক্ত পিউরিফাই করার জন্য বেশি কাজ করতে হয়। যদি
আপনার রক্ত দূষিত হয় তাহলে রক্তকে পাম করার জন্য হার্ট কেউ অনেক শক্তি দিতে হবে।
যার ফলে হাই ব্লাড প্রেসারের প্রবলেম দেখা যায়।
এই রক্তের দূষিত পদার্থগুলো ছোট ছোট হয়ে কোলেস্টরেলে যাওয়া জমা হতে শুরু করে
তখন আমরা এটাকে বলি হার্টের ব্লকেটস। পুরনো যুগে নিম একটা এমন গাছ যেটা দিয়ে
আমাদের রক্তকে পরিষ্কার করার জন্য ব্যবহার করা হতো। কিন্তু আজ মানুষ ঘরে সুন্দর
ফুল গাছ লাগাই নিম গাছ লাগায় না। পুরনো যুগের নিম গাছ বাড়িতে লাগানো হতো।
কারণ নিমের পাতাকে খেলে আপনার রক্ত পরিষ্কার হয় আর রক্ত পরিষ্কার হলে: ব্রণ,
কিডনি, হেয়ার ফল, হার্ট অ্যাটাক সহ নানা ধরনের রোগ থেকে রোগ থেকে মুক্তি পাবেন।
নিম শুধুমাত্র আমাদের রক্তকে পরিষ্কার করে না। এটি আমাদের রক্তকে গারো লাল করতে
সাহায্য করে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে নিমের রস খাওয়ার কারণে আমরা আমাদের
রক্তকে পরিষ্কার রাখতে পারব।
চর্ম রোগের জন্য নিমের রসের ব্যবহার
আমাদেরই সকলের প্রায়ই চমরোগ হয়ে থাকে। আমরা অনেকেই এটি অন্যকে বলতে লজ্জা
অনুভূত করি। এই চর্ম রোগের সবচেয়ে বড় সমাধান হলো নিমপাতা। নিমপাতা ব্যবহারের
ফলে চর্ম রোগের বিভিন্ন ধরনের রোগ যেমন-চুলকানি, দাদ, ফাঙ্গাস ইত্যাদির । এসব রোগ
বিশেষ করে গ্রাম অঞ্চলে বেশি হয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃ কুমারী মেয়ে চেনার গোপন উপায়
অনিয়মিত জীবন যাপন, ও স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন এর কারণে এসব রোগ চর্মে দেখা দিয়ে
থাকে। এছাড়াও নিম অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল হয়ে থাকে, যা বাজে ফাঙ্গাস কেউ মেরে
ফেলে আর আমাদের ঘরেও খারাপ ব্যাকটেরিয়াকেও প্রবেশ করতে দেয় না যদি ঘরে এই গাছ
থেকে থাকে।প্রতিদিন সকালে খালি পেটে নিয়মিত তিন মাস এই নিমের পাতাকে রস করে
খেয়ে ফেলতে হবে।
যার ফলে আপনি চর্ম রোগ থেকে মুক্তি পাবেন। এছাড়াও যদি আপনি নিয়ম মেনে না খান
এবং অতিরিক্ত মাত্রায় খেয়ে ফেলেন তাহলে আপনার চোখের দিকে কমিয়ে দিতে পারে এই
নিয়ম এর রস। হাজারও ঔষধি গুনেভরপুর নিমপাতার গুনগান বলে শেষ করা যাবে না। তাই
আমরা নিয়মিত খালি পেটে নিম পাতার রস খাওয়ার চেষ্টা করব।
নিম পাতার জাদুকরি উপকারিতা
নিম একটি ঔষধি গাছ যার ডাল, পাতা, রস সবই কাজে লাগে। নিম একটি বহু বর্ষজীবী ও
চিরহরিৎ বৃক্ষ। বাংলাদেশ সহ ভারতীয় উপমহাদেশে ঔষধি গাছ হিসেবে নিমের ব্যবহার
হয়ে আসছে গত পাঁচ হাজার বছর ধরে। প্রকৃতি কি করে একই সঙ্গে সমস্যা এবং সমাধান
ধারণ করে রেখেছে তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ নিম।
নিমের আছে ১৩০ টি ঔষধি গুন। ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া নাশক হিসেবে নিম খুবই
কার্যকর। আর প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও এর জুড়ে মেলা ভার। আসুন জেনে নেওয়া যাক
নিমের জাদুকরের উপকার।-
- খালি পেটে নিমপাতা খাওয়ার কারণে ক্যান্সার এবং টিউমারের কোষ কে ধ্বংস করে দেয়।
- নিম পাতার রস রক্ত চিনির পরিমাণ কমায়।
- ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী হল নিমের পাতার রস।
- নিমপাতায় থাকা অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও এন্টিফাঙ্গাল উপাদান রক্ত পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। এবং রক্তনালীদের জমে থাকা ময়লা আবর্জনা গুলো দূর করে।
- খালি পেটে নিমপাতার রস খাওয়ার কারণে জন্ডিসের রোগ থেকে সহজে মুক্তি পাওয়া যায়।
- নিম পাতার রস বিভিন্ন ধরনের ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে এবং ভাইরাস প্রতিরোধ করে।
- কিছু বিশেষ রোগ যেমন-বসন্ত, হাম ইত্যাদি রোগের জন্যও নিম পাতা খুবই উপকারী।
- অ্যালার্জির সমস্যা দূর করতে নিম পাতার রস প্রতিদিন সকালে খান এক সপ্তাহ।
- লিভারের জন্য অত্যন্ত উপকারী হল নিম।
- চুলের সমস্যার জন্য অত্যন্ত উপকার করে।
- হাঁপানের সমস্যা থেকে দূরে থাকার জন্য নিমের পাতার রস খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
লেখকের মন্তব্য: সর্বশেষ কথা
কোনও কিছুই বেশি পরিমাণে খাওয়া ভাল নয়া। তাই এক সঙ্গে অনেক বেশি পরিমাণে নিম পাতা
খাবেন না। অনেকে মনে করেন, নিম পাতা যত বেশি খাবেন তত ভাল পুষ্টি পাবেন। তবে,
সেটা ঠিক নাই। সর্বদা অল্প পরিমাণে খাওয়া ভালো। আপনি যদি কোন রোগে থাকেন তবে
নিমপাতা খাওয়ার আগে অবশ্য চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন।
যদিও নিম পাতা আমাদের সকলের জন্যই উপকারী। তবুও কিছু সাবধানতা অবলম্বন করা
গুরুত্বপূর্ণ। তাহলে আশা করা যায় উপরোক্ত আলোচনাটি পড়ার মাধ্যমে আপনি
সুস্পষ্টভাবে বুঝতে পেরেছেন খালি পেটে নিম পাতার রস খেলে কি হয় এবং খালি পেটে
নিমপাতা খেয়ে সহজেই এলার্জির দূর করুন তা সম্পর্কে পূর্ণ ধারণা।
সম্মানিত পাঠক,আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে
অবশ্যই বন্ধু-বান্ধবের মাঝে শেয়ার করে তাদেরও জানার সুযোগ করে দিন।এরকম সঠিক এবং
নির্ভুল তথ্য পেতে প্রতিনিয়ত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url