হার্ট অ্যাটাকের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত

আপনি কি হার্ট অ্যাটাক রোগ সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাই আজকে এই আর্টিকেলটিতে হার্ট অ্যাটাকের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়া আলোচিত হয়েছে হার্ট অ্যাটাক হয়েছে কিভাবে বুঝবেন? এই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা আজকে জানবো।
হার্ট অ্যাটাকের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার
আপনি যদি, হার্ট অ্যাটাক রোগ সম্পর্কে পূর্ণ ধারণা অর্জন করতে চান এবং এর থেকে পরিত্রাণ পেতে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য অনেক উপকারী হবে। তাই, মনোযোগ সহকারে আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ুন। তাহলে চলুন দেরি না করে হার্ট অ্যাটাকের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

ভূমিকা

হার্ট অ্যাটাক রোগ হল খুবই মারাত্মক একটি রোগ।আমাদের মানব দেহের অন্যতম প্রধান অঙ্গগুলোর মধ্যে একটি অঙ্গ হল হার্ট ।আমরা সকলেই জানে হার্ট এটাক খুবই মারাত্মক একটি রোগ কিন্তু কিভাবে হার্ট এটাক থেকে পরিত্রান পেতে হয়, হার্ট অ্যাটাক হলে কি করব এর তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ গুলো কি কি হবে সে সম্পর্কে জানি না। 
তাই আজকের এই আর্টিকেলটিতে আমি হার্ট অ্যাটাক নিয়ে বিস্তারিত সম্পূর্ণ আলোচনা করব। হার্ট অ্যাটাকের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার আমাদের জন্য জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।হার্টের নিজস্ব রক্ত সরবরাহ হঠাৎ কোনো কারণে বাধাগ্রস্ত হলে হার্ট অ্যাটাক হয়। এটি একটি জটিলতম রোগ। 

সুস্থ মানুষের ও হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। তাই, এ হার্ট অ্যাটাক নিয়ে বসে থাকলে আমাদের অনেক ক্ষতি সাধন হতে পারে। হার্ট অ্যাটাক বায়োকার্ডিয়াল ইনফেকশন হিসেবে পরিচিত।যেকোনো বয়সের লোকদের হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। হার্ট অ্যাটাক রোগের জন্য নির্দিষ্ট কোন বয়স উপলব্ধ নয়।

তাই বলা যায়, আপনি এতক্ষণে হয়তো বুঝে গেছেন উপরের বিষয়গুলোতে কি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে ।হার্ট এটাকের মত মরণব্যাধি রোগ থেকে পরিত্রাণের জন্য আজকের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

হার্ট অ্যাটাক কি ?

হার্ট অ্যাটাক হল হার্টের এক ধরনের রোগ। হার্ট এর নিজস্ব রক্ত সরবরাহ হঠাৎ কোনো কারণে বাধাগ্রস্ত হলে হার্ট অ্যাটাকের মতো রোগ হয়ে থাকে। হার্ট অ্যাটাক মায়োকার্ডিয়াল ইনফ্রাকশন হিসেবে পরিচিত। যেকোনো রোগের হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে মূলত বেশি গুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এক পর্যায়ে এই হার্টের বেশিগুলো অকেজো হয়ে পড়ে।

 যার ফলে দ্রুত চিকিৎসা এবং সময়মতো চিকিৎসা না নিলে হার্টের পেশুগুলো সম্পন্নভাবে নষ্ট হয়ে যায়। হার্ট বা হৃদ যন্ত্র সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য হার্টের পর্যাপ্ত পরিমাণে রক্ত সরবরাহ করতে হয়। কিন্তু একসময় এ রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাই। এর ফলে যদি রক্ত হাটে পৌঁছাতে না পারে, তাহলে হার্টের মাংসপেশীতে পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন পৌঁছাতে পারে না। 

আর তখনই হার্ট অ্যাটাকের শুরু হয়। সাধারণত, রক্তনালিতে ব্লক তৈরি হয় রক্ত চলাচলে মারাত্মক অথবা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেলে হার্ট অ্যাটাক হয়। এই সময় হাটের বিভিন্ন স্থানে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং বিভিন্ন রকমের জটিলতার সৃষ্টি হয়।

কাদের হার্ট অ্যাটাক হয়?

প্রিয় পাঠক, আপনি যদি জানতে চান তাদের হার্ট অ্যাটাক হয় তাহলে সম্পূর্ণটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। সকল বয়সের লোকদের এবং যেকোনো লোক এ হার্ট অ্যাটাকের মত ভয়াবহ রোগের শিকার হতে পারে। সাধারণত হার্ট অ্যাটাক বা হৃদরোগের মতো রোগে নারীদের তুলনায় পুরুষরা বেশি ভোগে থাকে।
তবে নারীরাও তাদের বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিতে পড়তে থাকেন।পুরুষের হার্ট এটাকের অন্যতম কারণ হলো-তারা ধূমপান করেন, দ্রুত টেনশন করেন, মানসিক চিন্তায় ভোগেন, উত্তর রক্ত মাত্রা এবং কোলেস্টরেলের মতো সমস্যায় ভোগেন। 

তাই তাদের হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা বেশি। বিভিন্ন কারণে যেমন-হার্টের রক্তনালী দেয় চর্বি, রক্ত আর বিভিন্ন ধরনের বস্তু জমাট বেঁধে রক্ত নালির হার্টের কোষের মৃত্যু ঘটায়। যার ফলে রক্তনালী দিয়ে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং হার্ট এটাকের প্রবণতা বেড়ে যায়।

হার্ট অ্যাটাক হয়েছে কিভাবে বুঝবেন?

প্রিয় পাঠক, আপনার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে কিভাবে বুঝবেন? তাহলে চলুন এই সম্পর্কে কিছু জেনে নেওয়া যাক।হার্ট এটাক হলে সহজে বোঝা যায়। যেমন-অল্পতেই দম ফুরিয়ে যাবে, বুকের মাঝখানে অথবা বাঁ পাশে তীব্র ব্যথা অনুভূত হবে। 

অনেক ক্ষেত্রে বুক ভারি হবে, বুকে চাপ, ঘাড়, চুয়াল বুকের পেছনে প্রচন্ড কম্পন দিয়ে ব্যথা অনুভূত হতে পারে। মুখ দিয়ে নিঃশ্বাস নেওয়ার সময় হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ বোঝা যায়।অতিরিক্ত ঘাম, বুকে ব্যথা হওয়া ছাড়া অতিরিক্ত ঘাম হয়।

বুক ধরফর করে, হঠাৎ শরীল খারাপ লাগা শুরু করতে পারে। পাশাপাশি অতিরিক্ত ঘাম, পেটের উপরে ভাগের ব্যথা ও যন্ত্রণা অনেক সময় হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গ হতে পারে, শ্বাসকষ্ট বমি বমি ভাব জ্ঞান হারানো ইত্যাদি লক্ষণ দেখলে অবশ্যই বুঝে নেবেন লোকটির হার্ট এটাক হয়েছে। তখনই, তৎক্ষণাৎ ভালো কোন ডাক্তার এর পরামর্শ নিতে হবে

হার্ট অ্যাটাক হলে করণীয়

বুকে ব্যথা অনুভূত হলে যথাসম্ভব রোগীকে তাড়াতাড়ি নিকটস্থ কোন হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে এবং দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হয়।। দ্রুত ইসিজি, রক্ত পরীক্ষা, পালস রেট পরীক্ষা, ইত্যাদি বিষয় পরীক্ষা করে হার্ড এটা নিশ্চিত করতে হবে। উপসর্গ বুঝে দ্রুত পদক্ষেপ নিলে বড় ক্ষতি এড়ানো যায়। মানসিক চাপসহ নানা কারণে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। হার্ট অ্যাটাক হলে ভয় পাবেন না।
দ্রুত জোরে জোরে ঘন ঘন কাশি দেবেন, যেন কাশির সঙ্গে কফ বের হয়ে আসে। এভাবে দুই থেকে তিন মিনিট পরপর, জোরে জোরে নিঃশ্বাস এবং কফ ফেলতে থাকুন। যার ফলে অনেকটাই রোগটা চলে আসবে। দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলার কারণে আমাদের শরীরের অক্সিজেন সরবরাহ বেড়ে যায়। যার ফলে অনেকটা সুস্থ অনুভূত হয়। তাই হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাক আমরা ভয় না পেয়ে উপরোক্ত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করলে, তার থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার যেতে পারে।

হার্ট অ্যাটাকের জটিলতা

হার্ট অ্যাটাক বর্তমানে পুরো পৃথিবীতে একটি জটিল দ্রবণে দাঁড়িয়ে গেছে। শুধু বয়স্কদের মধ্যেই নয় এটি বর্তমানে অনেক তরুণ সমাজের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। এর মূল কারণ হলো অসচেতনতা। হার্ট এটাকের অনেক ধরনের জটিলতা লক্ষ্য করা যায়। হার্ট অ্যাটাক হলে মূলত দুই ধরনের জটিলতা দেখা যেতে পারে-দীর্ঘমেয়াদে জটিলতা এবং স্বল্পমেয়াদী জটিলতা।

হঠাৎ মৃত্যু বা সাডেন কাটিয়ার ডেথ, বিভিন্ন ধরনের হার্টবিটের সমস্যা, হার্ট ব্লক, হার্টবিট কমে যাওয়া ভাল্বের সমস্যা ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সম্মুখীন হতে হয়। এছাড়াও রয়েছে কিডনে সমস্যা যার কারণে হার্ট এটাকের জটিলতা বেড়ে যায়। যাই হোক হার্ট অ্যাটাকের পরে ব্যবস্থা নিতে দেরি করা মানে হল হৃদপিন্ডের পেশীগুলির আরো বেশি ক্ষতি করা। 

হৃদপিন্ডের পেশিগুলোর ক্ষতি হলে অনেক ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে তার মধ্যে রয়েছে-ভাল্ব ফুটো হতে পারে এবং হার্টের রক্ত পাম্পিং ক্ষমতা প্রভাবিত হয়। তাই যত সম্ভব আমাদের সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

হার্ট অ্যাটাক রোগের চিকিৎসা

হার্ট অ্যাটাক মূলত রক্তনালী বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে হয়ে থাকে। তাই যত দ্রুত সম্ভব হার্টের রক্তনালীর রক্ত চলাচল পুনর প্রতিস্থাপন করাই প্রধান চিকিৎসা। যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা করা যায়। রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা ততবেশি ও দ্রুত হয়। এছাড়াও বর্তমানে ডিজিটাল চিকিৎসা পদ্ধতি গুলো ব্যবহার করতে হবে। রক্ত জমাট ভেঙ্গে দেওয়ার জন্য দ্রুত চেষ্টা করতে হবে এবং রক্ত চলাচল স্বাভাবিক করতে হবে।

হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ

হার্ট অ্যাটাক রোগ একদিকে যেমন মৃত্যুর ঝুঁকিতে বহন করে। অন্যদিকে মানুষকে তেমন আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়। একে বলা হয় মরণব্যাধি। এই রোগের চিকিৎসাও তেমন ব্যয়বহুল। তাই আমাদের সাবধানতা অবলম্বন করে এই রোগকে মোকাবেলা করতে হবে। হার্ট এটাকের লক্ষণগুলো আমাদের সকলের জেনে রাখা ভালো। 

এই লক্ষণ গুলো দেখে বুঝে নিতে হবে রোগীর হার্ট অ্যাটাক হয়েছে।এই লক্ষণ গুলো যদি কারো মাঝে দেখা যায়। তাহলে তাকে দ্রুত সম্ভব চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
  • বুকে ব্যথা করা
  • শ্বাসকষ্ট দম ফুরিয়ে যাওয়া
  • নিয়মিত পালস রেট
  • কাশি
  • তাড়াতাড়ি ক্লান্ত হয়ে পড়া
  • অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
  • মাথা ব্যাথা
  • অতিরিক্ত ঘাম হওয়া

হার্ট অ্যাটাকের কারণ

প্রতিবছর বিশ্বের পাই ৩৮ লাখ পুরুষ এবং ৩৪ লাখ মহিলা হৃদরোগে বা হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। তাই হার্ট এটাক সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা রাখা আমাদের সকলের প্রয়োজন। কি কি কারণে হার্ট এটাক হয়ে থাকে তা আমাদের জেনে রাখা খুবই জরুরী।হার্ট অ্যাটাক মূলত একটি মরণব্যাধি।হার্ট অ্যাটাকের বিভিন্ন ধরনের কারণ রয়েছে। 

এই কারণগুলোকে এড়িয়ে চলতে হবে আমাদের সকলকে। তাহলে চলুন হার্ট অ্যাটাকের উল্লেখযোগ্য কারণগুলো জেনে নেওয়া যাক।-
  • রক্তে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল থাকা
  • ধূমপান করা
  • অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া
  • চর্বিবহুল খাবার খাওয়া
  • উচ্চ রক্তচাপ
  • নিয়মিত শারীরিক ও পরিশ্রমের অভাব
  • অতিরিক্ত ওজনের অধিকারী হওয়া
  • ডায়াবেটিসের মতো রোগী ভোগা

হার্ট অ্যাটাক থেকে প্রতিরোধের উপায়

অস্বাস্থ্যকর জীবন যাপন হলো হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম একটি প্রধান কারণ। এটি অল্প সময় আমাদের মনে অনেক ভীতির সঞ্চার করে থাকে। এই ভীতি উপেক্ষা করে আমাদের প্রতিরোধের ব্যবস্থা করতে হবে। হার্ট অ্যাটাক থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। তার জন্য আমাদের হার্ট এটাকের সকল বিষয়ের উপরপ্রাথমিক ধারণা রাখতে হবে। 
হার্ট এটাক থেকে প্রতিরোধের মূল্য উপায় গুলোর মধ্যে রয়েছে-ধূমপান ত্যাগ করতে হবে, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে, জাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে, নিয়মিত শারীরিক চর্চা করতে হবে। জাঙ্ক ফুড এবং ফাস্ট ফুড পরিহার করে তুলতে হবে।

যথাসম্ভব দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে। নিয়মিত মেডিকেল চেকআপ করতে হবে। এবং ডাক্তারের পরামর্শ মত চলতে হবে। তাহলে অনেকটাই হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি মোকাবেলা করা সম্ভব।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক, হার্ট এটাক সম্পর্কে বিস্তারিত আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি আপনি এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে হার্ট অ্যাটাকের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।যদি আজকের এই আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১